মঙ্গলবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১১

অর্গানিক ও নন-অর্গানিক

অর্গানিক ও নন-অর্গানিক

কৃষিবিদ মো. এমদাদুল হক
অর্গানিক এবং নন-অর্গানিক বিতর্কটা এখন বেশ জমে উঠেছে। বিতর্কের ধাক্কাটা ছড়িয়ে যাচ্ছে সর্বত্র, অবিরত। কোনটি মানুষসহ সমগ্র জীবজগত এবং প্রকৃতির জন্য নিরাপদ; আর কোনটি নয়—বিতর্কের মূল বিষয় এটাই। ‘ন্যাচারাল ইকো সিস্টেম’ বলে একটি শব্দ আমরা সব সময় শুনে থাকি। সৃষ্টি-ধ্বংস আবার সৃষ্টি, বিবর্তন, পরিবর্তন, পরিবর্ধন ইত্যাদি ঘটনা প্রকৃতিতে নিত্য ঘটে চলেছে তার নিজস্ব নিয়মে, নিয়মে সৃষ্টি, বিকাশ, আত্মরক্ষা ও বাছাইয়ের যে ভারসাম্যপূর্ণ খেলা নিত্য ঘটে চলেছে, তার চালিকাশক্তি হচ্ছে ন্যাচারাল ইকো সিস্টেম। আর এই ইকো সিস্টেমের কারণে সৃষ্টি জগতে এত বৈচিত্র্যময়তা, যাকে আমরা বায়োডাইভারসিটি বলে থাকি। প্রকৃতির নিজস্ব উত্পাদন ব্যবস্থাটিকে আমরা অর্গানিক পদ্ধতি বলতে পারি। এর বিপরীত ব্যবস্থাটিই নন-অর্গানিক অর্থাত্ যেটা প্রকৃতির নিয়মসঙ্গত নয়, বরং আরোপিত ও নিয়ন্ত্রিত উত্পাদন ব্যবস্থা। জৈব বৈচিত্র্যকে জলাঞ্জলি দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু খাদ্য উত্পাদনে মনোযোগী হওয়ার কারণেই প্রচলিত হয়েছে এবং হচ্ছে ইন অর্গানিক ব্যবস্থাটি
অর্গানিক খাদ্য কেন খাবেন? এ প্রশ্নটি বাজারে গিয়ে অর্গানিক খাবার কেনার শুরুতেই আপনার মনে উঠবে। সুন্দর, আকর্ষণীয় এবং দেখতে তরতাজা সবজি চোখে পড়ার পর কেউ যদি আপনাকে বলে, এ তরতাজা শাক-সবজির পেছনে লুকিয়ে আছে ঘাতক বিষ তাহলে উত্তরে হয়তো বলবেন—পাগল না কি? কিন্তু আসলে এটাই বাস্তবতা। অধিক ফলনের নামে বর্তমান বিশ্বে যে চাষাবাদ ব্যবস্থা চালু রয়েছে তার ৯০ শতাংশই হচ্ছে রাসায়নিক কীটনাশক এবং সারের ব্যবহারের মাধ্যমে। এতে ফলন বাড়ছে প্রথমদিকে। কিন্তু পরে জমির উত্পাদন ক্ষমতা হ্রাসের সঙ্গে ফলনও কমছে। আর যান্ত্রিক-রাসায়নিক চাষাবাদ এখন এতটাই ক্ষতিকর যে, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টের পাশাপাশি নির্দিষ্ট জমিতে নির্দিষ্ট ফসলের বাইরে অন্য কিছু উত্পাদিত হচ্ছে না।
এ পরিস্থিতিতে একমাত্র প্রাকৃতিক পদ্ধতির চাষাবাদ এবং খাদ্যই একমাত্র বিকল্প। অর্গানিক চাষাবাদ পদ্ধতিতেই কেবল বীজ বপন থেকে ফসল উত্পাদন ও ঘরে তোলা পর্যন্ত সব ধরনের ডাটা সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। বিষয়টি সার্টিফাই করতে পশ্চিমা বিশ্বে রয়েছে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা।
অর্গানিক খাদ্য এবং চাষাবাদের প্রথম এবং প্রধান শর্তই হচ্ছে সব ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার থেকে বিরত থাকা। শুনলে অবাক হবেন, ৫০-এর দশকে বিশ্বের মোট চাষাবাদ প্রক্রিয়ায় বছরে ব্যবহার হতো মাত্র ৪০ লাখ টন রাসায়নিক সার বা কীটনাশক। আর এখন এর ব্যবহার দাঁড়িয়েছে ৪০ কোটি টনে। কিন্ত তারপরও বিশ্বের সব মানুষের মুখে অন্ন জুটছে না। তাই অর্গানিক খাদ্য গ্রহণের ১০টি সাধারণ কারণ তুলে ধরছি পাঠকদের জন্য।
১. অর্গানিক খাদ্য স্বাস্থ্যকর ২, কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই ৩. কোনো পেস্টিসাইড নেই ৪. বংশগত বিকৃতি (জি.এম.) নয় ৫. পশু খাদ্যে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার কম ৬. ব্যয় কম ৭. গুণগতমানে সেরা ৮. পশুদের প্রতি সর্বোচ্চ যত্ন ৯. পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতি ১০. স্বাদে অতুলনীয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন